সোহাগ ১১-২৫৫৩ Hino AK 1J তে ভ্রমণ রিভিউ




ঈদ পরবর্তী ছুটি কাটিয়ে যখনই ঢাকায় নিজ কর্মস্থলে ফেরার পালা আসে, তখনই ট্রেনের বাদুড়ঝোলা চোখে ভেসে উঠে। গা শিউরে উঠে। এটা প্রতিবারই। আর তখনই ভাল ভাল বাস আছে বলে মনকে শান্ত করি।
সকালে যাব বলে আয়েশের ঘুম ভেঙে আরামের বিছানা ছাড়িনি।
খেয়ে দেয়ে রেডি হতে প্রায় সাড়ে দশটা বেজে গেল।
এরপর বিরাসার থেকে পৈরতলা আসি। কাউন্টারে এসে তো চক্ষু চড়কগাছ।
ওরে আল্লাহ এত যাত্রী চাপ???
বিরস মনে কাউন্টারে যাই। একজন বলল, ভাই কই যাইতাছুইন? লাইনে দাড়াইন।
এ্যাঁ, আবার লাইনও আছে???
পাশে দেখি যে রয়েল কোচ এর লোক ডাকতেছে।
কিন্তু ওদিকে আমার কোন ভ্রুক্ষেপই নেই।
আমি বিগত তিন বছর ধরে সোহাগের যাত্রী।
এক দুবার রয়েল ও তিশাতে গিয়ে আমার ভালো লাগেনি।
দেরি হলেও সোহাগেই যাব বলে নিয়ত করলাম।
কাউন্টার ম্যান এর মুখোমুখি হতেই সে জানালো পিছনের সিট ব্যতীত কোন সিট নেই।
আমি কইলাম দশ গাড়ির পেছনে হলেও মাঝে অথবা সামনে সিট দিতে হবে।
ব্যাচারা মুচকি হেসে আমাকে চার গাড়ি পর 6A সিট দিল। 320 টাকার বিনিময় আমি একা দুটি সিট পাই। 6A এবং 6B।
আর যারা ফ্যামিলি প্যাকেজ নিচ্ছিল 2 সিটের দুইজন 540 টাকা ছিল। আমার আগে পিছে যারা ছিল সবার সিট পিছনে ছিল।
এবার অপেক্ষার প্রহর গুনতে লাগলাম।
এগারোটার সময় টিকিট কেটে গাড়িতে উঠলাম 1:20 মিনিটে। পৈরতলা থেকে গাড়ি ছাড়ে 1:25 মিনিটে।
গাড়ির নাম্বার 11-2553
ড্রাইভারের নাম হাবিব।
গাড়ির সিট বেশ পুরনো মনে হল। গাড়ি ছাড়তে ১জে ইঞ্জিনের চমৎকার সাউন্ড সেইসাথে বিরক্তিকর লক্কর-ঝক্কর আওয়াজ। মানে গাড়ি হল পুরনো দাদা।
পুরনো হলেও সিটগুলো মোটামুটি ভালই কম্ফোর্টেবল ছিল।
কিন্তু মাঝেমধ্যে কঠিন ঝাড়ি খেতে হয়েছে। যে সব ঝাড়ি তিশার টাটাতেও খাইনি।
(ড্রাইভার সাহেবের প্রশংসা না করলেই না। এত পুরনো গাড়ি হওয়া সত্বেও মাঝেমধ্যে এত স্মুথলি গাড়ি চালিয়েছেন যা কল্পনা করা যায় না।)
সুহিলপুর থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত প্রচুর জ্যাম ছিল।
বিশ্বরোড থেকে 1:50 মিনিটে গাড়ি ছাড়ে। আবার ভৈরবের জ্যাম। ভৈরব থেকে গাড়ি ছাড়ে 2:32 মিনিটে।
এরপর রাস্তা ফাঁকা ছিল। সেই টান ছিল গাড়ির।
গাড়িতে বসে অনেক চেষ্টা করেও স্পিড মিটার কানেক্ট করতে পারিনি। তার কারণে স্পিড মাপা সম্ভব হয়নি।
পুরো রাস্তায় কোন প্রকার ওটির খেলা-ধুলা হয়নি। কোন প্লেয়ার পাওয়া যায়নি।
গাড়ির অ্যাভারেজ স্পিড ছিল 75 থেকে 80 কিলোমিটার।
গাউছিয়ার আগে হবিগঞ্জের মডার্ণ কে ওটি দেয়।
4:31 মিনিটে কমলাপুর নামিয়ে দেয়।
সোহাগ পরিবহনের পজিটিভ দিকঃ
👉স্বাস্থ্যবিধি মেনে সিট বিক্রয় করা।
👉নিরাপদ ড্রাইভিং।
👉প্রচুর যাত্রী চাপ থাকা সত্ত্বেও ধৈর্য ধরে যাত্রীদের বুঝ দিয়ে শান্ত রাখা।
উক্ত বাসের নেগেটিভ দিকঃ
👉গাড়ির সিট পুরনো। জানালা প্রচুর আওয়াজ করে।
👉পোক তুলে। বিশেষ করে ইঞ্জিনের কাভারে নরসিংদী থেকে চারজন বসায়।
👉বাসের হেলপার ছিল একটু ত্যাড়া টাইপের। নাম নিশাদ।
রেটিংঃ
বাসের কন্ডিশনঃ ১০ এর মধ্যে ৬
ড্রাইভারঃ ১০ এর মধ্যে ১০
হেল্পারঃ ১০ এর মধ্যে ৫।

লিখেছেন: আবদুল্লাহ আল মাসউদ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger]

MKRdezign

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget